
ছিলোমিলো ভাষার কবি, লেখক কাজল দেমতা সহ বিশেষ সম্মাননা আবৃত্তিকার প্রদীপ দাস ও অমিত শিকিদারকে , বহুভাষিক কবি সম্মেলনে বরাকের সৌহার্দ্যের সংস্কৃতির
——————————-
বিশ্ব কবিতা দিবসে কবিতাময় সন্ধ্যা কথা-মধ্যসহরে
শিলচর, ২১ মার্চ : বিশ্ব কবিতা দিবসে এক কবিতাময় সন্ধ্যার সাক্ষী থাকল শিলচর। বহুভাষিক কবিতা সম্মেলন, আবৃত্তি, গুণিজন সংবর্ধনা —সব মিলিয়ে উৎসবের আনন্দে ভাসল চৈত্রের মেঘে ঢাকা আকাশের মায়াবী সন্ধ্যা। সৌজন্যে কথা বাকশিল্প চর্চাকেন্দ্র ও মধ্যসহর সাংস্কৃতিক সমিতি।
শিলচরের এ দুই অগ্রণী সাংস্কৃতিক সংস্থার যৌথ উদ্যোগে মধ্যসহর সাংস্কৃতিক সমিতির সভাগৃহে বিশ্বকবিতা দিবস উদযাপিত হয় শুক্রবার সন্ধ্যায়। উপত্যকার দুই সুপরিচিত আবৃত্তিকার প্রদীপ দাস ও অমিত শিকিদার সহ বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয় বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক কাজল দেমতা’কে। বহুভাষিক কবিতা সম্মেলনে বাংলা তো বটেই, অসমীয়া, ডিমাসা, হিন্দি, বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি, মৈথেই মণিপুরি ভাষায় স্বরচিত কবিতা পাঠ করা হয়। ডিমাসা ভাষার কবি বিশ্বজ্যোতি বর্মণ, অনুবাদ সাহিত্যে সাহিত্য অ্যাকাদেমি পুরস্কার প্রাপ্ত কবি নাওরেম বিদ্যাসাগর ( মণিপুরী), কবি পদ্মজা সিনহা (বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি), কবি দিলীপ সিংহ (হিন্দি), হেমেন শর্মা (মণিপুরী)।
কথা বাকশিল্প চর্চা কেন্দ্রের প্রাণপুরুষ শিলচরের বিশিষ্ট বাচিকশিল্পী মনোজ দেব, সাধারণ সম্পাদক শম্পা পাল চৌধুরী জানান, কবিতা শুধু পঙক্তি আর ছন্দের সমষ্টি নয়, এটি হৃদয়ের ভাষা, আত্মার গান। তাঁদের কথায়, শব্দের ছন্দ, আবেগের তরঙ্গ আর কল্পনার উড়ান মিলিমিশেই কবিতা। তাঁরা বলেন, বিশ্বব্যাপী কবিতা পাঠ, রচনা, প্রকাশনা ও শিক্ষাকে উৎসাহিত করার জন্য ১৯৯৯ সালে ২১ মার্চ দিনটিকে ‘বিশ্ব কবিতা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে ইউনেস্কো। কারণ, বিশ্বব্যাপী সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমের মধ্যে গল্প, কবিতা, রচনা অন্তর্ভুক্ত থাকলেও এই সমস্ত বিষয়ের প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ আগের চেয়ে অনেকটাই কমে গিয়েছে। তাছাড়া বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যক্রমেই এখন আর সমকালীন কবিতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা এমনও মনে করে যে, কবিতা হল কিছু মানুষের অপ্রয়োজনীয় সৃষ্টি মাত্র। কিন্তু কবিতা আমাদের চেতনাকে যে-ভাবে জাগ্রত করে, মননকে সমৃদ্ধ করে, তা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ-ই পদক্ষেপ। উদ্দেশ্য, কবিতাকে জনপ্রিয় করা এবং কবিতার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত বৈচিত্র্যকে উদ্যাপন করা। কবিতা শুধু সাহিত্যের অংশ নয়, এটি মানুষের আবেগ, সংগ্রাম, এবং স্বপ্নের প্রতিফলন। এই দিনটিতে কবিতার মাধ্যমে মানুষে মানুষে সংযোগ তৈরি হয়।