বন্যার জলমগ্ন বড়খলা: তাপাং-চাতলা পরিদর্শনে প্রাক্তন বিধায়ক কিশোর নাথ, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার আশ্বাস
যদিও নদীর জলস্তর কিছুটা হ্রাস পেয়েছে, তবে কাছাড় জেলার বহু এলাকা এখনো রয়েছে সম্পূর্ণ জলমগ্ন। বাড়িঘর, রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে কৃষিজমি পর্যন্ত ধ্বংস হয়ে গেছে বন্যার করাল গ্রাসে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, গোটা এলাকা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।
এই সংকটজনক পরিস্থিতির মধ্যেই বুধবার বড়খোলার প্রাক্তন বিধায়ক কিশোর নাথ নৌকায় চড়ে জেলার বন্যা কবলিত তাপাং ও চাতলা মণ্ডল পরিদর্শন করেন। এলাকা ঘুরে তিনি স্থানীয় কৃষক ও মৎস্যজীবীদের দুঃখ-দুর্দশা সম্পর্কে অবগত হন এবং তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন।
মাছ-ফসলের ক্ষতি, বিপাকে কৃষক-মৎস্যজীবীরা
প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের জেরে বরাক উপত্যকার একাধিক নদীর জল উপচে পড়ে তাপাং ও চাতলা মণ্ডলে প্রবেশ করেছে। এতে ভেসে গেছে বহু মাছের পুকুর ও ফসলের খেত। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মাছ ও ফসল সংরক্ষণের কোনো সুযোগ না পেয়ে তাঁরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। বেশিরভাগ মানুষ কৃষি ও মৎস্যজীবী হওয়ায় এই পরিস্থিতিতে তাঁদের জীবিকা পুরোপুরি বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় ও নৌকায় যাতায়াত
বন্যার জল হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় বহু পরিবার দিগর শ্রীকোনার শান্তিপুর গ্রামের ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। এলাকার অধিকাংশ রাস্তাঘাট ডুবে থাকায় স্থানীয়দের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এখন নৌকা। কিশোর নাথ নিজেও নৌকায় করেই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন।
প্রশাসনিক তৎপরতা ও সরকারি সহযোগিতা
পরিদর্শন শেষে কিশোর নাথ জেলা শাসক মৃদুল যাদবের সঙ্গে যোগাযোগ করে গোটা পরিস্থিতির বিস্তারিত তুলে ধরেন। জেলা শাসক আশ্বাস দিয়েছেন, খুব শীঘ্রই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও মৎস্যচাষীদের তালিকা তৈরি করে সরকারিভাবে সাহায্য প্রদান করা হবে।
এদিকে, মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্বশর্মাও শিলচরে এক ঝটিকা সফরে এসে বরাক উপত্যকার বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং প্রভাবিত মানুষদের পাশে থাকার জন্য সরকারি সহায়তার কথা ঘোষণা করেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে।
বড়খোলার তাপাং ও চাতলা মণ্ডলের মতো বহু এলাকায় পরিস্থিতি এখনও অত্যন্ত জটিল। তবে প্রশাসনের সক্রিয়তা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের আন্তরিক তৎপরতায় আগামীতে প্রভাবিত মানুষদের পুনরুদ্ধার এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পথ প্রশস্ত হবে বলে আশা করছেন সকলেই।